সব

দর্শক সমাগমে সমাপ্ত হলো পাবনার ঐতিহ্যবাহীহাটগ্রাম সোনালী সৈকতের নৌকা বাইচ

দর্শক সমাগমে সমাপ্ত হলো পাবনার ঐতিহ্যবাহীহাটগ্রাম সোনালী সৈকতের নৌকা বাইচ

শেখ রাসেল স্মৃতি স্মরণে পাবনা ভাঙ্গুড়া উপজেলার হাটগ্রাম সোনালী সৈকতে সমাপ্ত হলো মাসব্যাপী গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। পার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় আওয়মী লীগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখার জন্য হাজারো দর্শকের সমাগম ঘটে বিল পারে। সোনালী সৈকত প্রাঙ্গন উৎসে মুখরিত হয়ে উঠে নানা শ্রেনী পেশার দর্শক সমাগমে।


বাজনার তালে তালে রঙিন পোষাক আর দেশের পতাকা নিয়ে ছুটে চলে বাইচের নৌকা। নৌকার হাল ধরে আছেন মাঝি আর ছন্দের তালে বৈঠা ফেলছেন মাল্লারা। স্থানীয় ও জেলা বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে ছুটে আসা দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে উৎসব মুখোর হয়ে উঠে সোনালী সৈকত প্রাঙ্গণ। জেলা ও জেলার বাহিরের প্রায় ২০টি নৌকা অংশ নিয়েছে এবারের প্রতিযোগিতায়। সপ্তাহের ছুটির দুইদিন শুক্র ও শনিবার বিকালে প্রথম পর্বের খেলা অনুষ্ঠি হয়েছে।

সমাপনি দিনে স্থানীয় চারটি নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেন। বিলের দক্ষিণের দিকে প্রায় ২ কিঃমিঃ দূর থেকে উত্তরের দিকে ছুটে আসে দুটি করে নৌকা। নৌকার গতীর সাথে উপস্থিত দর্শকদের উল্লাসে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে বাইচ প্রাঙ্গণ। স্থানীয়রা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে এই নৌকা বাইচ দেখার জন্য। গ্রামের সাধারন মানুষের চাহিদা ও বিনোদন বিমুখ মানুষদের আনন্দ দিতেই এই আয়োজন বলে জানা গেছে। দেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিক নৌকা। তাই নৌকার প্রতি ভালোবাসা ও গ্রাম বাংলার সাধারন মানুষের জন্য প্রতি বছরই এই নৌকা বাইচের আয়োজন করে আসছেন স্থানীয়রা।


 স্থানীয় দর্শক মোঃ আলতাব সিফাত ও প্রভাষক আনোয়ার হোসেন বলেন, নয়ন অভিরাম সোনালী সৈকতের ঐতিহ্য হলো নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এই স্থানটিকে পর্যটন এলাকা হিসাবে ঘোষনা করা। এখানে সারা বছর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য দর্শনার্থীর সমাগম থাকে। এই অঞ্চলের যাতায়াতের সড়কের বেহালদশা। এখানে সন্ধার পরে আলোর ব্যবস্থা ঠিকমত থাকেনা। বসার স্থান বাচ্চাদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা করা হলে এই অঞ্চল ও জেলার মানুষ ছুটির দিন গুলিতে এখানে ঘুরতে আসতো। কিন্তু প্রশাসনের নজরদারি অভাবে কোন উন্নয়ন হয়নি। তাই আমাদের দাবি এই স্থানটিকে পর্যটন উপযুক্ত করে গড়ে তুলবে সরকার।


নৌকার মালিক আজহার প্রামানিক বলেন, এই অঞ্চলের ঐতিহ্যের সাথে নৌকা বাইচের সম্পর্ক। এই গ্রামের নৌকা আগে সরকারি ভাবে ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীতে বাইচে যেতো। সারা বাংলাদেশ থেকে সেখানে নৌকা নিয়ে আসতো সকলে। এই গ্রামের নৌকা প্রথম স্থান দখল করেছে বহুবার। আজ হারি হাওয়া পথে নৌকা বাইচ। তাই এই সোনালী সৈকতের বিশাল জলরাশিতে জাতীয় ভাবে নৌকা বাইচ করা সম্ভব। তবে তার জন্য সরকারি পৃষ্টপোষকতা দরকার। কারন একটি নৌকা তৈরি করতে আর তাকে যতœ করতে অনেক অর্থের দরকার হয়। তাই অর্খের অভাবে অনেকেই নৌকা বাইচের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। সরকারে সুদৃষ্টি পেলে আবারো জাগ্রত হতে পারে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা।


নৌকা বাইচের আয়োজক পার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক বলেন, দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার প্রতিক নৌকা। এই নৌকার সাথে আবেগ অনুভুতি জড়িত রয়েছে। গ্রামের মানুষ অধির আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে নৌকা বাইচ দেখার জন্য। তাইতো প্রতিবছর মাসব্যাপী এই সোনালী সৈকতে বাইচের আয়োজন করা হয়। লক্ষাধিক দর্শকের সমাগম ঘটে এই নৌকা বাইচ দেখার জন্য। আমরা আশা করি জাতীয় ভাবে এখানে নৌকা বাইচের আয়োজন করা সম্ভব। যদি সরকার সহযোগিতা করে তবে সারা দেশ থেকে নৌকা এনে আমরা আরো বড় পরিসের এই আয়োজন করতে পারবো।


অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন,পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম পাকন, উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ বাকী বিল্লাহ, জেলা পরিষদ সদস্য আসলাম আলী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ রঞ্জু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, আজিদা পারভীন, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সরোয়ার, আওয়ামীলীগ নেতা লুকমান হোসেন, এমপি পুত্র ইবনুল হাসান সাকিল প্রমুখ।


জেলাতে ৮ম বারের মত এই নৌকা বাইচের আয়োজন। প্রতিটি নৌকাতে একজন মাঝি আর ৬০ থেকে ৭০ জন করে বৈঠাল তাদের নৌকাকে রকেট গতীতে এগিয়ে নিচ্ছে বিজয় নিশানের দিকে। নৌকা যত এগিয়ে আসছে দর্শকদের উল্লাস ততই উচ্ছাসিত হয়। পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও কুষ্টিয়া জেলার প্রায় ২০টি নৌকা এবারের প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেন। হাটগ্রাম সোনালী সৈকতে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। গত মাসে ১৪ তারিখ থেকে এই নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সমাপনি দিনে স্থানীয় চারটি নৌকা  হাদল একতা এক্সপ্রেস, হাদল দূরন্ত এক্সপ্রেস, জনতার সংগ্রাম এক্সপ্রেস, চানদাই জনতা এক্সপ্রেস অংশ গ্রহণ করেন। সমাপনি দিনের প্রথম বাইচে অংশ গ্রহণ করেন হাদল দূরন্ত এক্সপ্রেস ও হাদল নিউ একতা এক্সপ্রেস। দ্বিতীয় খেলাতে অংশ গ্রহণ করেন জনতার সংগ্রাম ও চানদাই এক্সপ্রেস। এবারের প্রতিযোগিতায় দূরন্ত এক্সপ্রেস প্রথম ও চানদাই জনতার সংগ্রাম এক্সপ্রেস দ্বিতীয় স্থান দখল করে। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরুস্কারের নগদ অর্থ তুলেদের অতিথিরা।

আপনার মতামত লিখুন :

সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে পাবনা-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানালেন আব্দুল হামিদ মাস্টার

সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে পাবনা-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানালেন আব্দুল হামিদ মাস্টার

ভাঙ্গুড়ায় আলাদা ঘটনায় দু’জনের মরদেহ উদ্ধার

ভাঙ্গুড়ায় আলাদা ঘটনায় দু’জনের মরদেহ উদ্ধার

পাবনা-৩ আসনে নৌকার মনোনয়ন চান ফরিদপুরের মেয়র কামরুজ্জামান মাজেদ

পাবনা-৩ আসনে নৌকার মনোনয়ন চান ফরিদপুরের মেয়র কামরুজ্জামান মাজেদ

ভাঙ্গুড়ায় সরকারী স্কুলের লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নিয়েছে আশরাফুল লিটন বাহিনী

ভাঙ্গুড়ায় সরকারী স্কুলের লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নিয়েছে আশরাফুল লিটন বাহিনী

ভাঙ্গুড়ায় মন্দিরের সম্পত্তি দখল: উদ্ধারের আবেদন হিন্দু সম্প্রদায়ের

ভাঙ্গুড়ায় মন্দিরের সম্পত্তি দখল: উদ্ধারের আবেদন হিন্দু সম্প্রদায়ের

ভাঙ্গুড়ায় ব্রাজিলের পতাকা বিতরণ করলেন শেখ সাখাওয়াত

ভাঙ্গুড়ায় ব্রাজিলের পতাকা বিতরণ করলেন শেখ সাখাওয়াত

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার: PabnaTimes24.Com

সম্পাদক: মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান
০১৭২১৭৪৭৯৬৫
অফিসঃ ৪র্থ তলা, রানা শপিং কমপ্লেক্স , পাবনা প্রেস ক্লাব গলি, আব্দুল হামিদ রোড, পাবনা-৬৬০০
pabnatimes24.com@gmail.com